শামসুন্নাহার স্মৃতি, যিনি পরীমনি নামে পরিচিত, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। পরীমনির অভিনয়জীবনের শুরুটা সহজ ছিল না, কিন্তু নিজের দক্ষতা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে একজন উজ্জ্বল তারকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। চলুন জেনে নেই তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো।
বিষয়বস্তু
জন্ম ও শৈশবকাল
১. জন্ম ও পরিবার: পরীমনি ১৯৯২ সালে খুলনার সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি।
২. শৈশবের সংগ্রাম: শৈশবেই মাকে হারিয়ে তিনি নানা-নানির কাছে বড় হন, যা তাঁকে মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে সহায়তা করে।
শিক্ষাজীবন ও শৈল্পিক অনুপ্রেরণা
৩. প্রাথমিক শিক্ষা: পিরোজপুরে বড় হয়ে ওঠা পরীমনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন সেখানেই।
4. ঢাকায় আগমন ও নাচের প্রশিক্ষণ: স্নাতক শিক্ষার জন্য ঢাকায় এসে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে নাচ শেখা শুরু করেন। এই অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে তাঁর অভিনয়জীবনে সহায়ক প্রমাণিত হয়।
অভিনয়জীবনের শুরু
- মডেলিং থেকে অভিনয়ে: মডেলিং এবং নাটকে অভিনয় দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের শুরু হয়। ধীরে ধীরে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন।
- প্রথম চলচ্চিত্র: তাঁর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ভালোবাসা সীমাহীন, যেখানে তিনি পর্দায় প্রথমবারের মতো ধরা দেন।
জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছানো
- রানা প্লাজা চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়া: এই ছবির মাধ্যমে তিনি ব্যাপক আলোচনায় আসেন এবং জনসাধারণের নজরে পড়েন।
- বিশ্বসুন্দরী ও অন্যান্য চলচ্চিত্র: পরীমনি অভিনীত বিশ্বসুন্দরী, রক্ত, স্বপ্নজালসহ আরও অনেক সিনেমা তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে যায়।
ব্যক্তিগত জীবন ও চ্যালেঞ্জ
- ব্যক্তিগত জীবনে আলোচিত ঘটনা: কয়েকবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও সেগুলো টেকেনি। সর্বশেষ, অভিনেতা শরিফুল রাজের সাথে তাঁর বিচ্ছেদ হয়েছে।
- সন্তান ও মাতৃত্ব: ২০২২ সালে তিনি মা হন এবং ছেলের নাম দেন শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপ্রিয়তা
- সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা: টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তাঁর বিশাল ফ্যানবেস রয়েছে, যা তাঁর জনপ্রিয়তাকে আরও বাড়িয়েছে।
গ্রেফতার ও জীবনের ঘাত–প্রতিঘাত
- মাদক সংক্রান্ত অভিযোগে গ্রেফতার: ২০২১ সালে তাঁকে বনানীতে নিজ বাসা থেকে মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়, যা তাঁর জীবনকে নতুনভাবে আলোচনায় নিয়ে আসে।
পরীমনির সাফল্য ও পুরস্কার
- প্রাপ্তি ও স্বীকৃতি: পরীমনি বাবিসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার পেয়েছেন।
- ফোর্বস এশিয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি: ২০২০ সালে ফোর্বস এশিয়ার ১০০ জন সেলিব্রিটির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন।
পরীমনির এই দীর্ঘ ও সংগ্রামময় জীবন তাকে একজন সত্যিকারের আইকন করে তুলেছে, যিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দারুণ প্রভাব ফেলেছেন।