বাংলাদেশে পলিথিন এবং পলিপ্রোপিলিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ১ অক্টোবর থেকে। এই সিদ্ধান্ত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেয়া হয়েছে। পণ্য বহনের জন্য এখন থেকে পাট ও কাপড়ের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, তবে প্রশ্ন উঠছে—পলিথিন ছাড়াও কি আমরা কার্যকরভাবে চলতে পারব?
পলিথিনের ক্ষতিকারক প্রভাব
পলিথিনের ব্যবহার আমাদের জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তবে এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই।
দূষণের কারণ: পলিথিন মাটির উর্বরতা কমায় এবং জলাশয়ে দূষণ সৃষ্টি করে।
স্বাস্থ্য ঝুঁকি: পলিথিনের উপাদান মানবদেহে বিভিন্ন জটিল রোগের সৃষ্টি করে।
দীর্ঘস্থায়ী বর্জ্য: পলিথিন কখনোই নষ্ট হয় না, ফলে পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয়।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সমস্যা: প্লাস্টিক বর্জ্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়।
বিকল্প উপায়
পলিথিনের ব্যবহার সীমিত করার জন্য কয়েকটি বিকল্প উপায় রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের জন্য কার্যকর এবং সহজলভ্য। চলুন দেখি এই বিকল্পগুলো:
পাটের ব্যাগ: পাটের ব্যাগ শক্তিশালী, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব। এগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য।
কাপড়ের ব্যাগ: পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাপড়ের ব্যাগ, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করা যায়।
কাগজের ঠোঙ্গা: পণ্য বহনের জন্য কাগজের ঠোঙ্গা নিরাপদ বিকল্প।
বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ: কিছু কোম্পানি এমন ব্যাগ তৈরি করছে যা প্রাকৃতিকভাবে পচে যায়।
পুনঃব্যবহারযোগ্য বক্স: বাজার থেকে পণ্য আনার জন্য পুনঃব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বা কাঠের বক্স ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচ: কাচের পাত্রে পানীয় ও খাবার পরিবেশন করতে পারলে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো সম্ভব।
জলছোঁয়াবিহীন বিকল্প: প্লাস্টিকের পরিবর্তে লোহার বা ধাতব পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে।
সচেতনতা বৃদ্ধি
সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
শিক্ষা: বিদ্যালয়গুলোতে পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা বাড়ানো।
মাধ্যমিক প্রচার: গণমাধ্যমে পলিথিনের ক্ষতি ও বিকল্পের প্রচারণা।
সামাজিক প্রচারণা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ক্যাম্পেইন।
পলিথিন ব্যবহার ছাড়া জীবনযাত্রা সম্ভব, তবে এটি নির্ভর করে আমাদের সচেতনতা ও বিকল্পের প্রাপ্যতার উপর। পাট ও কাপড়ের তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করলে পরিবেশ রক্ষা হবে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমবে।