মা ইলিশ সংরক্ষণের জন্য ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নেমেছেন জেলেরা, এবং উপকূলীয় আড়তগুলোতে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে এখন ইলিশের প্রচুর সরবরাহ দেখা যাচ্ছে, যা আড়ত ও ক্রেতাদের মধ্যে উদ্দীপনা তৈরি করেছে। জেলেরা নদী থেকে ফিরেই তাজা ইলিশ বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারে পৌঁছে দিচ্ছেন, আর আগের তুলনায় দাম কিছুটা কম হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে।
বিষয়বস্তু
আড়তে ইলিশের সরবরাহ ও দাম
আড়তে ইলিশের সরবরাহ আবারও স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে এবং দামও সাশ্রয়ী। হরিণা ফেরিঘাটে দেখা গেছে, সকাল থেকে ইলিশের আড়তগুলোতে জেলেরা মাছ নিয়ে আসছেন। ছোট আকারের একহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা এবং মাঝারি সাইজের ইলিশ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বড় ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০০ থেকে ৬০০০ টাকায়। এ দামে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতারা।
ইলিশ ধরার অনুমতি ও গবেষণা কার্যক্রম
নিষেধাজ্ঞার সময় নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রাখার ফলে ইলিশের ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়াটি নিরাপদে সম্পন্ন হয়। এতে ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ সময় মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্রে ইলিশের প্রজনন ও সংরক্ষণ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রমও পরিচালিত হয়। চাঁদপুরের বিভিন্ন আড়তে গবেষকরা ইলিশের দৈর্ঘ্য, ওজন, ও ডিম ছাড়ার পরিমাণ পরিমাপ করেন, যা ইলিশের ভবিষ্যৎ মজুদ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবে।
জেলেদের অনুভূতি ও ভবিষ্যতের প্রত্যাশা
নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলেরা উচ্ছ্বসিত। কিছু জেলে জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার ফলে এবার ইলিশ ধরতে গিয়ে তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়নি। তবে কিছু জেলে বড় সাইজের ইলিশ কম পাওয়ার আক্ষেপ করেছেন, যা হয়তো আগামী কিছু দিনে আবারও বাড়বে বলে তাদের আশা।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া
জেলেদের উৎসাহ ও আড়তে ইলিশের সরবরাহ দেখে ক্রেতা-বিক্রেতারা উচ্ছ্বসিত। ইলিশের দাম কিছুটা কম হওয়ায় ক্রেতারা তুলনামূলক কম খরচে তাজা ইলিশ কিনতে পারছেন। আড়তদারদের মতে, নদীতে ইলিশের সরবরাহ বাড়লে সামনের দিনগুলোতে ইলিশের দাম আরও কমতে পারে।
এই প্রজননকালীন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইলিশের মজুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা আগামী মৌসুমে আরও ভালো ফল দিবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।