মায়ের স্মার্টফোন কি শিশুর ভাষা বিকাশে বাধা তৈরি করছে?

Is the mother's smartphone hindering the child's language development

বর্তমান যুগে স্মার্টফোনের ব্যবহার আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তবে এটি মায়েদের ক্ষেত্রে আরও বেশি চ্যালেঞ্জের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, বিশেষ করে যারা নবজাতক শিশুর লালন-পালনে ব্যস্ত। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, মায়েরা স্মার্টফোনে আসক্ত হলে তাদের শিশুর ভাষা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

কী বলছে গবেষণা?

এই গবেষণায় দেখা গেছে, মায়েরা স্মার্টফোন ব্যবহার করার সময় শিশুর সঙ্গে কম কথা বলেন। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ফোন ব্যবহারের ফলে মায়েরা শিশুর সঙ্গে ২৬ শতাংশ কম কথা বলেন, যা শিশুর ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী মায়েরা যাদের সন্তানের গড় বয়স ছিল চার মাস, তাদের ফোন ব্যবহারের সময় সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।

কেন মায়ের ফোন আসক্তি শিশুর ভাষা বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে?

বিজ্ঞানীদের মতে, ফোনে অল্প সময়ের জন্য বারবার মনোযোগ দেওয়ার কারণে মায়েরা শিশুদের সঙ্গে কম কথোপকথন করেন। এই আচরণটি বিশেষ করে সকাল ৯টা থেকে ১০টা, দুপুর ১২টা থেকে ১টা, এবং বিকেল ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে বেশি দেখা যায়। এই সময়গুলোতে, মায়েরা মূলত ফোন ব্যবহারের কারণে সন্তানের সঙ্গে কম সময় কাটান, যা শিশুর ভাষার বিকাশের জন্য ক্ষতিকর।

মায়েদের জন্য পরামর্শ

শিশুর ভাষা বিকাশ এবং মনের স্থায়িত্বের জন্য মায়েদের ফোন ব্যবহারে সচেতন হওয়া জরুরি। শিশুদের প্রাথমিক ভাষা ও সামাজিক যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়নে মায়ের ভূমিকাকে বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। গবেষকদের মতে, নতুন মায়েদের উচিত তাদের শিশুর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে মনোযোগ দেওয়া এবং ফোন ব্যবহারে সীমা রাখা।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:

  • ফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করুন: যখন শিশু আপনার সঙ্গে আছে, সেই সময়ে ফোন থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
  • পরিকল্পিত বিরতি নিন: প্রয়োজনীয় যোগাযোগ বা কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফোন ব্যবহার করুন।
  • শিশুর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ গড়ে তুলুন: শিশুর সঙ্গে কথা বলুন, গান গাও, বা গল্প বলুন। এর মাধ্যমে শিশুর ভাষা ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

মায়েদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অভ্যাস পরিবর্তন করলে শিশুর ভাষা বিকাশের জন্য আরও ভালো পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। এটি শিশুদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে এবং তাদের যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top