নুসরাত ইমরোজ তিশা, বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল। তিনি তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন এবং তার অভিনয়ের দক্ষতার জন্য নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিশার জীবন ও ক্যারিয়ারের কিছু আকর্ষণীয় ও অজানা তথ্য নিয়ে আজকের এই লেখাটি।
বিষয়বস্তু
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
১. জন্ম ও শৈশব: নুসরাত ইমরোজ তিশার জন্ম ১৯৮৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে। ছোটবেলায় তিনি গান শিখেছেন এবং ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন।
২. নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় সাফল্য: ১৯৯৫ সালে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় গান বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন, যা তার মিডিয়া জগতে প্রবেশের পথ তৈরি করে।
ক্যারিয়ারের শুরু
৩. টেলিভিশনে অভিষেক: তিশা ১৯৯৮ সালে ‘সাত প্রহরের কাব্য’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশনে অভিনয় শুরু করেন। এরপর থেকে তিনি নাটক ও বিজ্ঞাপনে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
৪. মডেলিং ক্যারিয়ার: তিশা তার ক্যারিয়ারের শুরুতেই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মডেলিং করেছেন, যার মধ্যে মেরিল, কোকা-কোলা, সিটি সেল এবং কেয়া কসমেটিকস অন্যতম।
চলচ্চিত্রে অভিনয় ও সাফল্য
৫. চলচ্চিত্রে অভিষেক: তিশার চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ২০০৯ সালে ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ ছবির মাধ্যমে, যেখানে তিনি তার অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন।
৬. জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি: ২০১৬ সালে ‘অস্তিত্ব’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন, যা তার ক্যারিয়ারে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
জনপ্রিয় কাজ ও অনন্য ভূমিকা
৭. বিভিন্ন চরিত্রে দক্ষতা: তিশা নাটক ও চলচ্চিত্রে নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে ‘ডুব’, ‘হালদা’ এবং ‘টেলিভিশন’ ছবিতে তার অভিনয় দর্শকের মন কেড়ে নিয়েছে।
৮. আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: তিশার অভিনীত ‘ডুব’ সিনেমাটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়, যেখানে তিনি প্রখ্যাত অভিনেতা ইরফান খানের সঙ্গে কাজ করেন।
ব্যক্তিগত জীবন
৯. বিয়ের সম্পর্ক: তিশা ২০১০ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে, নাম ইলহাম নুসরাত ফারুকী।
১০. সমাজসেবায় অংশগ্রহণ: তিশা সমাজকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন।
বিশেষ কিছু অর্জন
১১. মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার: তিশা তার ক্যারিয়ারে ১০টি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেছেন, যা তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ।
১২. শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে স্বীকৃতি: তিশা বাংলাদেশি চলচ্চিত্র জগতে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন এবং তার সেরা কাজের জন্য বহু পুরস্কার পেয়েছেন।
১৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয়তা: তিশা ২০১৬ সালে নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন, যা পপকর্ন ডিজিটালের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
অন্যান্য তথ্য
১৪. সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা: ছোটবেলায় গানের প্রতি তিশার বিশেষ অনুরাগ ছিল এবং তিনি একটি ব্যান্ড দলও গঠন করেছিলেন।
১৫. প্রিয় চলচ্চিত্র: তিশার প্রিয় চলচ্চিত্র ‘ব্ল্যাক সোয়ান’ এবং ‘স্টিল অ্যালিস’, যেখানে নাটালি পোর্টম্যান ও জুলিয়ান মুর অভিনীত চরিত্রগুলো তার পছন্দের।
১৬. আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ: তিশা দেশের বাইরেও কাজ করেছেন, যেমন রবি ও ডাবর অয়েলের বিজ্ঞাপনে তার অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য।
নুসরাত ইমরোজ তিশা এক গুণী ও প্রতিভাবান অভিনেত্রী হিসেবে বাংলাদেশে পরিচিত। তার জীবন ও ক্যারিয়ারের প্রতিটি অধ্যায়ে নতুন কিছু যোগ হয়েছে, যা তাকে একজন কিংবদন্তি অভিনেত্রী হিসেবে স্থান করে দিয়েছে।