কেন আমেরিকানরা নারী নেতৃত্বে আজও দ্বিধায় ভুগছে?

Why are Americans still hesitant about women's leadership

আমেরিকার রাজনৈতিক ইতিহাসে বহুবার নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছিল, তবু এখনো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হতে পারেননি। কল্পনা করুন, কেবলমাত্র ১০ শতাংশ ভোটারই নারী প্রার্থীকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে প্রার্থীর লিঙ্গকে প্রধান বিবেচ্য বিষয় হিসেবে দেখে। তবে এই দ্বিধার কারণ ঠিক কী? কেন আমেরিকার সমাজে আজও নারী নেতৃত্ব গ্রহণ করা কঠিন?

১. ঐতিহাসিক ও সামাজিক মানসিকতা

আমেরিকায় রাজনীতির সূচনা থেকেই পুরুষতন্ত্র প্রবল ছিল। ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতি ও নেতৃত্বকে “পুরুষদের কাজ” হিসেবেই ধরা হয়েছে। বর্তমানে যদিও সমাজের অনেকাংশে এই ধারণা বদলেছে, তবুও বেশিরভাগ আমেরিকানই এখনও নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে সঙ্কোচে ভোগেন।

২. সঠিক যোগ্যতার অভাব?

নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে কিছু আমেরিকান বিশ্বাস করেন যে যোগ্য নারী প্রার্থীর অভাব রয়েছে। এক জরিপ অনুযায়ী, ৩৮ শতাংশ আমেরিকান মনে করেন যে নারীদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে, যা তাদের নেতৃত্বের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখে। কিন্তু এর কারণ হিসেবে দেখা যায় যে পুরুষদের তুলনায় নারীদের পেশাগত ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ বেশি হতে পারে, যা তাদের অভিজ্ঞতা অর্জনের পথ কঠিন করে দেয়।

৩. রাজনৈতিক প্রভাব ও মিডিয়ার ভিন্নমুখী আচরণ

মিডিয়া বরাবরই নারী প্রার্থীদের প্রতি ভিন্নমুখী মনোভাব পোষণ করে এসেছে। নারী প্রার্থীদের নেতৃত্ব, দক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর মিডিয়ার নেতিবাচক মনোভাব অনেকেরই মনোভাবকে প্রভাবিত করে। একইসঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে মিডিয়া নারী প্রার্থীদের বাহ্যিক অবয়ব নিয়ে আলোচনা করে, যা তাদের পেশাদারিত্বকে প্রভাবিত করে।

৪. লিঙ্গগত সমতার ধারণা

যদিও অধিকাংশ আমেরিকান লিঙ্গ সমতার ধারণাকে সমর্থন করে, তথাপি রাজনীতির মতো শীর্ষ ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত। যেমন, অনেক নারী ভোটারই নারী নেতৃত্বকে সমর্থন করতে চাইলেও রাজনৈতিক ও আর্থিক বিভিন্ন কারণের জন্য পুরুষ প্রার্থীদেরই সমর্থন করেন।

৫. ভবিষ্যতের পরিবর্তনের প্রত্যাশা

গত কয়েক বছরে আমেরিকার নারী নেতৃত্বের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬ সালে ৩২ শতাংশ আমেরিকান নারী প্রেসিডেন্ট দেখতে চেয়েছিল, যা বর্তমানে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই পরিবর্তন মনোভাবকে বাস্তবিক রূপ দিতে আরো সময় প্রয়োজন।

এখনো আমেরিকার রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নারী নেতৃত্ব গ্রহণের পথে অনেক বাধা রয়েছে। সমাজে নারী নেতৃত্বের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু ঐতিহাসিক প্রভাব ও সামাজিক মনোভাবের পরিবর্তন দ্রুত ঘটবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top